সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল চত্বরে চলছে মাসব্যাপী লোক-কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। করোনার মধ্যেও শুক্রবার ছুটির দিনে আগত দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মেলা প্রাঙ্গণে।রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করছে এ মেলায়। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোয় মেলা প্রাঙ্গণ পুরোপুরি মুখরিত হয়ে ওঠে। ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর জানুয়ারিতে মেলার আয়োজন করে থাকলেও এ বছর করোনা মহামারির জন্য মেলা পিছিয়ে ১ মার্চ থেকে শুরু করেছে। এ মেলা চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত।
এবারের মেলায় ভিন্নতা এনে শুধুই লোকজ ঐতিহ্যের পণ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে। লোকজ কারুপণ্য ছাড়া অন্য কোন কিছু প্রদর্শন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে অন্যান্য স্টল কম থাকলেও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লোকজ উৎসবে গ্রামীণ ঐতিহ্যের রূপ।
এবারের লোক-কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর তাঁত শিল্প থেকে শুরু করে সোনারগাঁয়ের হাতি, ঘোড়া, জামদানি, নকশী কাঁথা, টেপা পুতুল, কাঠের কারু শিল্প, বাঁশ-বেত শিল্প, নকশি হাতপাখা, রাজশাহীর শখের হাড়ি, বাঁশ, বেত, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কিশোরগঞ্জের মৃৎশিল্প, নওগাঁ, মাগুরা ও ঝিনাইদহের লুপ্তপ্রায় শোলা শিল্প। ঢাকার শাঁখা ও মৃৎশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার নকশি হাতপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, ঠাকুরগাঁওয়ে বাঁশের কারুশিল্প, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার খাদি, তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি, বান্দরবান ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্পসহ ইত্যাদি কারুপণ্য স্থান পেয়েছে।
এবারের মেলায় মোট স্টল রয়েছে ১০০টি। মেলার মূল চত্বরে মাঠের মাঝে বিশেষ প্রদর্শনীতে সাজানো হয়েছে দেশের প্রথিতযশা কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে ‘কর্মময় কারুশিল্পী’ প্রদর্শনী। বিশেষ এ প্রদর্শনীতে ২৪টি স্টলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৪৮ কারুশিল্পী দেশের হারানো ঐতিহ্যকে আবার নতুন করে আবিষ্কার করছেন। এ বছর শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব পালন করা হয়েছে। সে উপলক্ষে মেলায় বঙ্গবন্ধু আলোকচিত্র প্রদর্শন হচ্ছে।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, প্রতি বছরের মত আকর্ষণীয় বিভিন্ন খেলা, গান, প্রদর্শনী অনুষ্ঠান ছাড়াও এবারের উৎসবে গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক জীবনের প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে বৈচিত্র্যময় ভাবে। প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখাই ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য। এই ধারাবাহিকতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply