বিজন কুমার.সিরাজগঞ্জ থেকে : সিরাজগঞ্জে ১৫ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রী অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বাড়িতে ফিরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই স্কুলছাত্রী। স্বজনদের অভিযোগে, স্থানীয় কয়েক বখাটে কিশোর তাকে অপহরণ করে নিয়ে গণধর্ষণ করায় লজ্জায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে। নিহত স্কুলছাত্রীর মা জানান, গত দুই বছর ধরে একই মহল্লার আব্দুল আজিজের ছেলে জিম (১৬) তার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ বিষয়ে জিমের অভিভাবককে অনেকবার অভিযোগ করা হলেও তারা শাসন করে দেয়ার কথা বলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়। এরপরও জিম আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করতেই থাকে।
জিমের অত্যাচারের বাধ্য হয়ে নিজ মেয়েকে এক আত্মীয়ের ছেলের সাথে বুধবার (১৭ মার্চ) বাগদানের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু জিম পুলিশকে ফোন করে ডেকে এনে বাগদান প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দেয়। পরে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে বাসার সামনে থেকে জিমসহ মাহমুদপুর মহল্লার জীবন, অন্তর, রুমন ও চর রায়পুর মহল্লার কাইয়ুম তার মেয়েকে জোরপূর্বক মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক থানায় অভিযোগ করে মেয়েটির বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে পুলিশ মনোরথ নামে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। গভীর রাতে আনছার নামে মাহমুদপুর মহল্লার এক ব্যক্তি ওই ছাত্রীকে থানায় পৌঁছে দেয়। পরদিন শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে মেয়েটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাসায় ফিরে রান্নাঘরে ঢুকে ভেতর থেকে আটকে দেয় এবং ফ্যানের সঙ্গে কাপড় ঝুলিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে স্বজনেরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, বিকেলে ওই স্কুলছাত্রীর অপহরণের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। রাতে তাকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির অভিভাবকরা এ ব্যাপারে কোনো মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুরে আমরা খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply