নিজস্ব প্রতিবেদক.লন্ডন : অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ২০২২ সাল থেকে ‘গ্রেটার লন্ডন মাল্টিলিংগুয়ালিজম এ্যান্ড ডাইভারসিটি ডে’ পালনের প্রস্তাব উত্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মুজিববর্ষ বাংলা ভাষা শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিশিষ্ট ব্রিটিশ এমপি, লন্ডনে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকগণ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিরা বায়ান্নোর মহান ভাষা শহিদের ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন ও যুক্তরাজ্য ইউনেস্কো কমিশনের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু‘র জন্মশতবার্ষিকীর এই বিশেষ অনুষ্ঠানে লন্ডনে অবস্থিত ১৩টি দূতাবাসের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ অংশ নেন ও দূতাবাসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা মহান ভাষা শহীদ ও জাতির পিতাকে উৎসর্গ করে মনোজ্ঞ সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য এবং নিউহ্যামের সঙ্গীত বিভাগের শতাধিক শিশু-কিশোর শিল্পী সমবেত কন্ঠে “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” অমর সঙ্গীতটি পরিবেশন করে। দূতাবাসগুলোর মধ্যে ছিলো সাইপ্রাস, ভারত, মালদ্বীপ, সেন্ট ক্রিস্টোফার ও নেভিস, শ্রীলংকা, জর্জিয়া, হনডুরাস, মলডোভা, সার্বিয়া, উত্তর ম্যাসিডোনিয়া, রাশিয়া ও থাইল্যান্ড ।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে এ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মিনিস্টার ফর লন্ডন, স্মল বিসনেজ এন্ড এন্টারপ্রাইজ পল স্কালি এমপি, কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসি, ইউনেস্কোর প্রাক্তন মহাপরিচালক মিসেস ইরিনা বোকোভা, ভারতের হাইকমিশনার মিসেস গায়ত্রি ইসার কাউর, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত পিসানু সুভানাজাতা, ইউকে ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো-এর চিফ এক্সিকিউটিভ জেমস ব্রিজ, বাংলাদেশি-ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম, যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক বেন মেলর, ব্রিটিশ কাউন্সিল গ্লোবাল নেটওয়ার্কেও পরিচালক চার্লি ওয়াকার, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধি সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার অসামান্য নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন: “বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সর্বপ্রথম বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে তাঁরই সুযোগ্য কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে বিশেষ কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসকে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। যার ফলে আজ সমগ্র বিশ্বব্যাপী অমর একুশকে নিজ নিজ মাতৃভাষার দিবস হিসেবে উদযাপন করছেন।” তিনি একুশে ফেব্রুয়ারিকে ২০২২ সাল থেকে Greater London Language and Diversity Day হিসেবে ঘোষনার আহবান জানিয়ে বলেন ২০২২ সালে বাংলাদেশে অমর একুশের এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত একটি প্রতীকী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন। এরপর ভাষা শহীদ ও অন্যান্য শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
Leave a Reply