ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রেম আর বিয়ের মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে। বহু বছরের চেনা সম্পর্কও বদলে যায় বিয়ের পর। বিয়ের পর একসঙ্গে থাকতে থাকতেই একটা মানুষকে সবচেয়ে ভালো চেনা যায়। যে কোনও সম্পর্কেই সমস্যা দ্বন্দ্ব এসব থাকবেই। এই সমস্ত কিছু নিয়েই সম্পর্ক। তাই সব সময় ঝগড়া না করে কিছু বিষয়ে ঠান্ডা মাথায় উভয়কেই আলোচনা করতে হবে। এছাড়াও দুজনকেই মানিয়ে গুছিয়ে চলতে হবে। বিয়ের আগে সংসার সম্পর্কে তেমন ধারণা কারোরই থাকে না। বিয়ের পর সাংসারিক চাপ লেগেই থাকে। কথায় বলে কাপ আর প্লেট পাশাপাশি থাকলে ঠুকোঠুকি লাগেই। ছোট কোনও একটা বিষয়ও হঠাৎ কে বড় আকার ধারণ করে। সে কারণেই বিয়ের প্রথম এই দু বছরকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এই দুবছরে সবচেয়ে বেশি দুজনকে চেনা যায়। একে অপরের পাশে থাকার মানসিকতা তৈরি হয়। চাকরি সূত্রে বা পড়াশোনার কারণে অনেকেই বিয়ের পরও একে অপরের থেকে দূরে থাকেন। কিন্তু সেক্ষেত্রেও দুজনের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যদি একে অপরকে সময় দেন। প্রথম দুবছরে কি কি মেনে চলবেন দেখে নিন।
ভুল বোঝাবুঝি যেন না হয় :
বিয়ের প্রথম দুবছর সম্পর্কের ভিত তৈরি করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই এই দুবছরে চেষ্টা করুন দুজনে মিলে খুব ভালো সময় কাটাতে। এই দুবছরে জীবনে যে পরিবর্তন আসে তাই থেকে যায় সারা জীবন। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম দুবছরে নিজেদের মধ্যেকার ছোটখাটো সমস্যা রয়ে যায় বছরভর। এমনকী পরবর্তীতে ডিভোর্সের পথেও তারা পা বাড়িয়েছেন। বিয়ের পর প্রথম এই দু বছর জীবনে পজিটিভ এনার্জি দেয়। আর তাই যে কোনও নতুন সম্পর্ক পজিটিভিটি দিয়েই শুরু করার কথা বলা হয়। বিয়ের পর উভয়কেই বেশ কিছু দায়িত্ব নিতে হয়। কিন্তু নিজেদের মধ্যেও অনেক বেশি ধৈর্য্য আনতে হবে।
হানিমুন ব্লুজ :
বিয়ে আসছে, বিয়ে হবে এই আনন্দ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলতে থাকে কয়েক মাস ধরে। কেনাকাটা, সাজগোজ, বিয়ের অনুষ্ঠান, আত্মীয়স্বজন…সব গিয়ে শেষ হয় হানিমুনে। হানিমুন যে কোনও দম্পতির কাছেই একটা স্বপ্ন। কয়েকদিন একসঙ্গে নিভৃতে থাকা, খাওয়া এই এপিসোড শেষ হলে অনেকেই মুষড়ে পড়েন। সকলকেই ফিরে যেতে হয় কাজের দুনিয়ায়। আর তাই কীভাবে নিজেদের মধ্যেকার রোম্যান্স বজায় রাখবেন তা নিজেরাই ঠিক করুন। মাঝেমধ্যেই সময় পেলে বেড়িয়ে পড়ুন উইকএন্ড ট্রিপে।
কঠিন সময়ে পাশে থাকুন :
বিয়ের পর প্রথম বছরটা বেশ কঠিন। কারণ বিয়েতে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা খরচ হয়। তাই বিয়ের একদম পরপর আর্থিক অবস্থা নিয়ে সকলেই একটু চাপে থাকেন। ছেলে ও মেয়ে উভয়েই এখন বিয়েতে নিজেদের সাধ্যমত খরচ করেন। আর তাই পরবর্তীতে কীভাবে সংসার চালাবেন, কীভাবে খরচে রাশ টানবেন তা নিজেরাই ঠিক করুন। নিজেরা একসঙ্গে বসে কথা বলুন। প্রয়োজনে একসঙ্গে সঞ্চয় করুন। অধিক কেনাকাটা বা এক জন অন্যজনকে টাকা পয়সা নিয়ে খুব একটা চাপ দেবেন না।
একে অপরকে সময় দিন :
সারা সপ্তাহ দুজনেই খুব ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু এর মধ্যেও উইকএন্ডে একে অপরকে সময় দিন। একসঙ্গে ঘরের কাজ সারুন। ঘুরতে যান। দুজন দু জায়গায় থাকলে উইক এন্ডে একে অপরের সঙ্গে দেখা করুন। যদি দুটি আলাদা শহরে থাকেন তাহলে নিজেদের সুবিধে মতো ছুটি নিয়ে একে অপরের কাছে যান। বন্ধুদের সঙ্গেও সময় কাটাবেন। কিন্তু তার আগে সময় দিন নিজেদের সম্পর্কে। দুজনেই আগে থেকে নিজেদের প্ল্যান একে অপরকে জানিয়ে রাখবেন।
তুলনা নয় :
নিজে যে টুকু পেয়েছেন, যে টুকু পাচ্ছেন সেই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন। নিজের গণ্ডি নিজেকে বুঝতে হবে। সেই সীমা পার করলে নিজেই মুশকিলে পড়বেন। সবার চাকরি, আর্থিক সঙ্গতি একরকম নয়। আর তাই যখন অন্য বন্ধু খুব দামি হোটেলে থাকছে, বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছে এসব দেখে নিজের মনকে ছোট করবেন না। কিংবা স্বামী বা স্ত্রী কেউই একে অপরের উপর এসব চাপিয়ে দেবেন না। বরং মিলেমিশে নিজেদের মতো ভালো থাকতে চেষ্টা করুন। সময়ে সবই হয়। সূত্র : এই সময়
Leave a Reply