সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামের জোড়া খুনের ঘটনায় দোষী ও জড়িতদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। রোববার (১১ এপ্রিল) সকাল ১২টায় সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের জয়কলস পয়েন্ট এলাকায় জয়কলস গ্রামের নিহত দিপু বিশ্বাস ও জামিনী বিশ্বাসের পরিবার ও এলাকাবাসীর আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে বক্তব্য রাখেন জয়কলস গ্রামের নিহত জামিনী বিশ্বাসের স্ত্রী ছায়ারানী বিশ্বাস, নিহত দিপু বিশ্বাসের স্ত্রী বেবি রানী বিশ্বাস, ছাতক কচুরগাঁও গ্রামের নিতাই বিশ্বাস, নিহতের ভাই দিলু বিশ্বাস, রাজেন্দ্র বিশ্বাস, নিহত যামিনী বিশ্বাসের ছেলে রাশেন্দ্র বিশ্বাস, ভাতিজা পিন্টু বিশ্বাস, বন্টু বিশ্বাস, হরলাল বিশ্বাস, রাজেন্দ্র কান্তি সরকার, সুভল বিশ্বাস, লাবন্য বিশ্বাস, কমলা বিশ্বাস, পরশ রানী বিশ্বাস, উজানীগাঁও গ্রামের সালেহ আহমদ লিটন, আব্দুল আহাদ, রাকেশ বিশ্বাস, অতুল বিশ্বাস, সূচিত্রা বিশ্বাস, রবি বিশ্বাস, শুকলা বিশ্বাস, মিন্টু বিশ্বাস সহ শতাধিক স্থানীয় লোকজন।
মানববন্ধনে নিহত দিপু বিশ্বাসের স্ত্রী বেবী রাণী বিশ্বাস, ভাই দিলু বিশ্বাস, নিহত জামিনী বিশ্বাসের ছেলে রাশেন্দ্র বিশ্বাস ও জামিনী বিশ্বাসের স্ত্রী ছায়া রাণী বিশ্বাস বক্তব্যে বলেন-নিহত দিপু বিশ্বাস ও জামিনী বিশ্বাসের প্রকৃত খুনী জয়কলস গ্রামের শৈলেন্দ্র তালুকদারের ছেলে নিউটন তালুকদার, কৃষ্ণমাস্য দাসের ছেলে বাবুল মাস্য দাস, মৃত রমন বিশ্বাসের ছেলে রন বিশ্বাস, হরি দাস তালুকারের ছেলে মিলু তালুকদার বাঘা ও বিনয় গোস্বামীর ছেলে গৌরপদ গোস্বামী। এ ঘটনায় পুলিশ রন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করলেও এখনো পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে আরো চারজন। ঘটনার পর থেকেই এই চারজন পলাতক রয়েছেন। তবে পুলিশ একজন আসামী রন বিশ্বাসকে ধরলেও নিহত দিপু বিশ্বাস ও জামিনী বিশ্বাসের অন্যান্য খুনিদেরকে আঁড়াল করতে চাইছে। তাই অনতি বিলম্বে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দিতে হবে।
নিহত দিপু বিশ্বাসের স্ত্রী বেবী রানী বিশ্বাস আরো বলেন, ঘটনার দিন রাতে থানা পুলিশ বাড়িতে এসে আমাকে থানায় যেতে বলে তারা আমাকে সাথে করে নিয়ে যায়, আমি থানায় গেলে তারা জানান একটি কাগজে স্বাক্ষর না করলে নিহত দিপু বিশ্বাস (আমার স্বামী) এর লাশ ময়না তদন্ত করা যাবে না। এ কথার পরেই আমি উল্লেখিত ৫ জনের নামে মামলার এজাহারে দেওয়ার কথা বলে তাদের কাগজে স্বাক্ষর করি। পরে জানতে পারি থানা পুলিশ একজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যরা ৫ জনের নাম উল্লেখ করলেও তারা আমাদের কথা শুনেননি। পরে দিলু বিশ্বাস বাদী হয়ে আমলগ্রহণকারী জুডিশিয়াল আদালতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এই মামলাও কোন কার্যক্রম নেই। আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বিগত ২৫ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জয়কলস গ্রামের মৃত লাল মোহন বিশ্বাসের ছেলে দিপু বিশ্বাস (৪০) ও ও মৃত কানাই লাল বিশ্বাসের ছেলে জামিনী বিশ্বাস গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ সদর হাসাপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার দিপু বিশ্বাসকে মৃত ঘোষনা করেন এবং ঘটনার ১ দিনপর নিহত জামিনী বিশ্বাস সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
Leave a Reply