দিলরুবা হক : ঘরে-বাইরে-দেশে কিংবা বিদেশে নিজে কাজ করে প্রমাণ দিচ্ছেন যোগ্যতার। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সীমানাতেও উড়িয়েছেন লাল সবুজের পতাকা। বর্তমানে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই উল্লেখ্যযোগ্য অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে নারীদের। আর সেখান থেকেই শোনা যায় তাদের সাফল্যের গল্পগুলো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমানতালে লড়ে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন আপন মহীমায়। তাদের একজন দিলরুবা আক্তার মিলি। যিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী।
২০১৬ সালে ঢাকায় বন বিভাগের একজন বনরক্ষী হিসেবে যোগ দেন দিলরুবা। বর্তমানে মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। তবে তার এই আজকের অবস্থানের জন্য অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, যার শুরুটা মাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়া জীবন থেকেই।
আলাপচারিতায় দিলরুবা আক্তার মিলি বলেন, বরিশাল থেকে পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোগ নিই বনরক্ষী হওয়ার। বনজঙ্গল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা থেকেই এই সিদ্ধান্ত। প্রথম দিকে কিভাবে কী করব তা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলাম। কেননা যে কোনো কিছুর নতুন উদ্যোগ নেওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় কিন্তু আমার পরিবার, ও বিশেষ করে বাবার হাত ধরেই এগিয়ে চলি।
তিনি বলেন, বনরক্ষী পদে নিয়োগ পরীক্ষা দেই। এরপর ভাইভা শেষ করে ট্রেনিং নিই রাজশাহী পুলিশ একাডেমি থেকে। তবে পরীক্ষা ও ট্রেনিং নেওয়ার সময় বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ি। এ পেশায় নারীসংখ্যা শূন্যের দিকে। ফলে বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করত হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় ২০৩ পুরুষের মধ্যে একমাত্র আমি নারী হিসেবে যোগ দিই। সেখানে পরীক্ষা ও ভাইভায় উপস্থিত হতে প্রথমে সমস্যা হলেও পরে তা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাই। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকজনের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে নানা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে থাকি। এর পর ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে ২০১৬ সালে যোগ দিই। তখন থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছি।’
দিলরুবা বলেন, ‘শুরুর দিকে যখন চাকরি করতে ঢাকায় আসি, তখন থাকা-খাওয়াসহ নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলাসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল বটে তবে যত দিন যাচ্ছিল- তত আত্মবিশ্বাসী হতে থাকি। আবার প্রথম ও একা নারী হিসেবে এ পেশায় কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তাই সাহসী হওয়া খুব জরুরি ছিল আমার জন্য। তাই দিনের সঙ্গে বাড়তে থাকে আমার কাজের গতি ও আস্থা। আমি চাই প্রতিকূলতাকে জয় করে আমার মতো এই পেশায় আরও অনেক মেয়েরা আসুক।’
Leave a Reply