নিউইয়র্ক প্রতিনিধি : প্রবাসে বসবাসকারী আমরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী,কবি সাহিত্যিক, রাজনীতিবীদ, সমাজকর্মী বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি ডিজিটেল আইনে গ্রেফতার, অত্যাচার-নির্যাতন এবং ক্ষেত্র বিশেষে হত্যার অভিযোগ উঠায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সরকার আইন করবে জনগণের স্বার্থে, সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার প্রয়োজনে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সরকার ডিজিটেল আইন সহ এমন কিছু আইন করেছে, তার অপপ্রয়োগ সমাজের মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে।
এক সময় ৫৪ ধারায় মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে। তার পরিবর্তনের দাবি উঠলে সরকার ৫৭ ধারা এবং ৫৭ ধারার সংশোধন করে ডিজিটেল আইন করা হয়। ডিজিটেল আইন করার সময় তার নানান ধারা নিয়ে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, সমাজসচেতন ব্যক্তিরা সংশোধন কিংবা বাতিলের দাবি তুলেছিলেন। সরকার সেসবে কর্ণপাত বা পরিবর্তন করেনি। কথা ছিল জাতির পিতা, জাতীয় পতাকা, নারীকে নিয়ে অশালীন কটাক্ষ ও মন্তব্য ইত্যাদির বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ হবে। কিন্তু আমরা দেখছি বাস্তবে এই আইনের মাধ্যমে তার অপব্যবহার করে ভিন্নমত দমন ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। মুক্তমনা লেখক, কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ হচ্ছে। ইতিমধ্যে বহু লেখক, সাংবাদিককে গ্রেফতার করে জেলে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে। জামিনযোগ্য হওয়া সত্বে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তি আইনে কবি, লেখক সাংবাদিক মোশতাক আহমদ গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিলেন। পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী ছয়বার জামিন চেয়েও জামিন দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি জেলের অভ্যন্তরে বন্দী অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে অত্যধিক নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
জেল হলো নিরাপত্তার স্থান। সেখানে কিভাবে একজন লেখকের মৃত্যু হয় তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে মাঠে নেমেছে। সরকার প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন চালাচ্ছে। আমরা সরকারের এই দমনপীড়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা নি¤œ স্বাক্ষরকারীরা মনে করি অবিলম্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহিৃত করে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। একই সাথে তথ্য প্রযুক্তি আইন সংশোধন অথবা জননির্যাতনমূলক ধারাসমূহ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
স্বাক্ষরকারীরা: মনজুর আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক সম্পাদক সাপ্তাহিক আজকাল, বেলাল বেগ, লেখক প্রাবন্ধিক ও প্রাক্তন টিভি প্রযোজক, মাহবুবুর রহমান, প্রবীণ সাংবাদিক, মাহফুজুর রহমান, সম্পাদক বর্ণমালা নিউজ ডটকম, লাবলু আনসার, সম্পাদক সাপ্তাহিক প্রতিদিন, ইব্রাহিম চৌধুরী, আবাসিক সম্পাদক সাপ্তাহিক প্রথম আলো, শাহাব উদ্দীন সাগর, সম্পাদক সাপ্তাহিক নবযুগ, খুরশেদুল ইসলাম, সভাপতি প্রোগ্রেসিভ ফোরাম, আলীম উদ্দীন সেক্রেটারী প্রোগ্রেসিভ ফোরাম, সাহাবউদ্দীন, প্রাক্তন চাত্রনেতা ও বাসদ নেতা, সুব্রত বিশ^াস, সহ সভাপতি উদীচী যুক্তরার্ষ্ট্র, কাশেম আলী, উদীচী যুক্তরাষ্ট্র, শরাফ সরকার, সহসভাপতি উদীচী যুক্তরাষ্ট্র, মোহাম্মদ হারুন, সাংগঠনিক সম্পাদক উদীচী যুক্তরাষ্ট্র, আশীষ রায়, প্রচার সম্পাদক, উদীচী যুক্তরাষ্ট্র, শামসাদ হোসাম সভাপতি মহিলা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র, সুলেখা রায় সাধারণ সম্পাদক মহিলা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র, মনিজা রহমান, লেখক ও সাংবাদিক, রওশন হক, লেখক ও সাংবাদিক, মোশারফ খান, এমাদ চৌধুরী, সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাদির স্মৃতি পরিষদ, আব্দুর রহিম সাধারণ সম্পাদক ক মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাদির স্মৃতি পরিষদ ও সৈয়দ রেজাউল করিম প্রমুখ।
Leave a Reply