সুনামগঞ্জে প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আলোচিত ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীন (স্বাধীন মেম্বার) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ (পিবিআই)।শনিবার (২০ মার্চ) দিবাগত রাত তিনটার দিকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান।
তিনি জানান, নোয়াগাঁও গ্রামে হামলায় মূল আসামি শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে পিবিআই কুলাউড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে, তাকে সিলেটে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে স্বাধীন মেম্বার জানান, তিনি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় রয়েছেন। তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চান। আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান স্বাধীন। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে সহায়তা করতে চান বলে জানান তিনি।
গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর থেকেই হামলাকারী হিসেবে ওঠে আসে স্বাধীন মেম্বারের নাম। হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত মামলায়ও স্বাধীন মেম্বারকে আসামি করা হয়।
শহীদুল ইসলাম স্বাধীনের বাড়ি শাল্লার পাশ্ববর্তী দিরাই উপজেলার নাচনি গ্রামে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে এক যুবকের দেওয়া স্ট্যাটাসের জেরে ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাজারও লোক মিছিল নিয়ে এসে এই হামলা চালায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের বেশিরভাগই আসে স্বাধীনের গ্রাম দিরাইয়ের নাচনি থেকে। স্বাধীন মেম্বারও হামলাকারীদের দলে ছিলেন। তার উপস্থিতিতেই হামলা হয়।
স্বাধীন মেম্বারের সাথে জলমহাল নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে মামুনুল অনুসারীদের সাথে তিনি এই হামলায় অংশ নেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। বাড়িঘর ভাঙচুর হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপেই স্বাধীন মেম্বারের নাম ওঠে আসে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুলের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক যুবক। এই স্ট্যাটাসের জেরে হিন্দু অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে ৮০টিরও বেশি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়েরের পর এখন পর্যন্ত যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে সহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Leave a Reply